
পৌর মার্কেট ‘দখল’ করে বিএনপি কার্যালয়
সারাদেশ
বরিশাল ব্যুরো 2025-01-11
পটুয়াখালীর গলাচিপা শহরের পৌরসভা মাল্টিপারপাস মার্কেটের তিন তলায় ৭২০ স্কয়ার ফিটের ফ্লোর দখল করে বিএনপির কার্যালয় করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় আসবাব ওঠানোর পরদিন দোয়া অনুষ্ঠান করে কার্যালয় উদ্বোধন করেছেন বিএনপি নেতারা। যদিও এখন পর্যন্ত সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি। ফ্লোরটি ভাড়া দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ফরম বিক্রিও শুরু করেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যেই দখল নেওয়ায় বিএনপির বিরুদ্ধে শহরে নেতিবাচক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মৌখিক অনুমতিতে সাময়িকভাবে উঠেছেন। ভাড়াটিয়া নির্ধারিত হলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গলাচিপা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছত্তার হাওলাদারের নেতৃত্বাধীন উপজেলা কমিটি কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুন অনুসারী। আরেক গ্রুপ সাবেক এমপি প্রয়াত শাহজাহান খানের অনুসারী।
২০০৪ সালে শহরের প্রাণকেন্দ্র কৃষি ব্যাংক ভবনের পশ্চিম পাশে খাসজমি দখল করে বিএনপি কার্যালয় করা হয়। সেটি বর্তমানে শাহজাহান খান অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে। ২০২৩ সালে কমিটি গঠনের পর পদধারী হাসান মামুন অনুসারীরা সেখানে যান না। তারা বৃহস্পতিবার দখল করা পৌর মার্কেট কার্যালয়ে বসছেন।
পৌরসভার বাজার পরিদর্শক জুয়েল গাজী জানান, শহরের চাল বাজারে মাল্টিপারপাস মার্কেটের দোতলায় ১০টি স্টল এবং সমপরিমাণ আয়তনের তৃতীয় তলার ফ্লোর ভাড়া দিতে গত ৩০ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। ১ জানুয়ারি থেকে ফরম বিক্রি চলছে। শ্রমিক দলের এক নেতা তৃতীয় তলা ভাড়ার বিষয়ে
কথা বলতে পৌরসভায় আসেন। টাকার অঙ্ক শুনে তিনি ফরম নেননি। বৃহস্পতিবার তৃতীয় তলায় বিএনপি কার্যালয় করা হয়েছে বলে শুনেছেন। কীসের ভিত্তিতে তারা সেখানে বিএনপি কার্যালয় করেছেন, তা জানেন না জুয়েল।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, তৃতীয় তলা ভাড়া নিতে ১২ লাখ টাকা অগ্রিম ও ২০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আগ্রহীদের কাছে ফরম বিক্রি ও ২৭ জানুয়ারি বেলা ৩টায় জমা ফরম উন্মুক্ত করা হবে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘আমাদের কার্যালয় নেই। এখানে-ওখানে বসতাম। মার্কেটের তৃতীয় তলা পরিত্যক্ত থাকায় আপাতত অস্থায়ী কার্যালয় করেছি। ভাড়াটিয়া চূড়ান্ত হলে চলে যাব।’
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কার্যালয় করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পৌরসভা যে টাকা চেয়েছে তা দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। আমরা নির্লজ্জ, তাই উঠেছি।’
পৌর প্রশাসক ও ইউএনও মিজানুর রহমান বলেন, ‘মার্কেটের তৃতীয় তলা ভাড়া নিতে বিএনপি নেতারা এসেছিলেন। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কাউকে ভাড়া দেওয়া হবে না বললে তারা মাঝেমধ্যে মিটিংয়ে বসার মৌখিক অনুমতি চান। ভাড়াটিয়া চূড়ান্ত হলে চলে যাবেন।’