বিদেশে মাস্টার্স করতে চান?

বিদেশে মাস্টার্স করতে চান?

ক্যাম্পাস

জায়ান আবেদীন, কানাডা থেকে 

2025-01-20

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই হাজারও শিক্ষার্থী বিদেশে মাস্টার্স  করার জন্য বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান। বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী যেতে আগ্রহী এমন দেশগুলোর অন্যতম হচ্ছে – যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন এবং জার্মানি। এসব দেশের উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণত নভেম্বর থেকে শুরু করে জানুয়ারির মধ্যেই বেশির ভাগ বিদেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়তে যাওয়ার জন্য আলাদা আলাদা নিয়ম রয়েছে। তবে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণ কিছু নিয়ম বিশ্বের প্রায় সব দেশে একই। তাই আপনি যদি বিদেশে পড়তে যেতে চান, তবে প্রথমেই কোন দেশে যেতে চান, তা নির্ধারণ করতে হবে। তারপর সে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোর্স, শিক্ষাবৃত্তির সুযোগ, জীবনযাপনের ব্যয়সহ নানা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে  কানাডা ও ইউরোপে সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা এবং বৈচিত্র্যময় পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। 
অস্ট্রেলিয়া বা অন্যান্য দেশে স্কলারশিপ কিংবা আর্থিক সহায়তার সুযোগ কম; তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক গবেষণা বা শিক্ষকতা সহকারী হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।  আপনাকে আপনার পড়াশোনার বিষয় সম্পর্কে সহায়ক অধ্যাপকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি। কারণ তাদের সঙ্গে সুযোগ পাওয়া যেতে পারে স্নাতক গবেষণা বা শিক্ষকতা সহকারী হিসেবে কাজ করার। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক গবেষণা বা শিক্ষকতা সহকারী হিসেবে পড়াশোনার অর্থ জোগাড়ের সুযোগ করে দেয়। যে বিষয়ে পড়াশোনার জন্য আবেদন করছেন, তার জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল না থাকলে সেই অধ্যাপকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, যাদের গবেষণার বিষয় আপনার সঙ্গে মিলবে। তাহলেই স্নাতক গবেষণা বা শিক্ষকতা সহকারী হিসেবে কাজের সুযোগ পাওয়া সম্ভব। কিছু ইউরোপীয় দেশে টিউশন ফি খুব কম। এসব দেশে যারা আর্থিক কারণে মাস্টার্স করার সুযোগ পান না তাদের জন্য আদর্শ হতে পারে।  জার্মানি, ইতালি ও অস্ট্রিয়ায় এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়া যায়।  আপনি যদি মনে করেন, পড়াশোনা শেষ করে সেই দেশেই স্থায়ী হবেন তাহলে বেছে নিতে পারেন কানাডা। কারণ সেখানে পড়াশোনা শেষ করে পিআরের সুযোগ আছে।  যুক্তরাজ্য বা অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে মাস্টার্স করতে চান, তাহলে ইরাসমাস মুন্ডাস, কমনওয়েলথ বা ডিএএডি ভাষার বৃত্তির মাধ্যমে সুযোগ পাওয়া যেতে পারে। দেশ বা অঞ্চল নির্বাচনের পর গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপনি যে বিষয়ে মাস্টার্স করতে চান, সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেওয়া। টিউশন ফি, আবহাওয়া, গবেষণার সুযোগ, চাকরির সুযোগ, পরিবহন, জীবনযাত্রার খরচ ইত্যাদি বিষয়ে বিবেচনা করা উচিত। কোর্স বা প্রোগ্রাম নির্ধারণের সময় বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আপনি কোন বিষয়ে পড়তে চান, বিশ্ব প্রেক্ষাপটে কোনটার চাহিদা বেশি, দেশীয় চাকরি বাজারে কী ভালো হবে, কী পড়লে সহজেই পেশাগত উন্নতি ও লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব, আপনি যে দেশে পড়তে যেতে আগ্রহী সে দেশে আপনার পছন্দের বিষয়ে উচ্চশিক্ষার মান বা পদ্ধতি বিশ্বে কতটুকু গ্রহণযোগ্য বা কতটুকু সময়োপযোগী,  কোর্সটিতে পড়াশোনা শেষে কোথায় কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলবেন, সম্ভাবনা ও অসুবিধা বা প্রতিবন্ধকতার মাত্রা কতটুকু– এ প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর পাওয়ার জন্য আপনি উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্রের সঙ্গে অথবা ওই কোর্সে পড়াশোনা করেছেন বা করছেন এমন কোনো শিক্ষার্থীর সঙ্গে পরিচয় থাকলে আগে থেকেই আলাপ করে নিতে পারেন। এতে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে। যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রধানত উইন্টার ও ফল সেশনে আবেদন গ্রহণ করে। ফল সেশনের আবেদন আগের বছরের আগস্টে জমা নেওয়া শুরু হয়। 
ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত তারা আবেদন গ্রহণ করে। অনেক সময় ফেব্রুয়ারি পর্যন্তও আবেদন জমা নেয়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ফল সেশনটিই সবচেয়ে জনপ্রিয়। কারণ, এ সেশনের সময় বেশির ভাগ আর্থিক সুবিধা পাওয়ার সুযোগ থাকে। উইন্টার সেশনের আবেদন আগের বছরের এপ্রিলের দিকে জমা নেওয়া শুরু হয় এবং মে মাসের শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয়। বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় উইন্টার সেশনে সব কোর্স অফার করে না। কাজেই আপনি যে বিষয়ে পড়তে চাচ্ছেন সেটি কোন সেশনে আছে, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টাইমলাইন কিছুটা ভিন্ন। দেশভেদে এগুলো ভিন্ন হয়।
কিন্তু আপনি যদি ১০ থেকে ১২ মাস সময় নিয়ে শুরু করতে পারেন, তাহলে যে দেশেই যেতে চান না কেন, পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে যথেষ্ট সময় পাবেন। v
 

© Samakal
Shares:
Leave a Reply