
আনন্দের হল ফিস্ট
ক্যাম্পাস
মো. আশিকুজ্জামান 2025-01-20
ক্লাস-পরীক্ষার হাজারো ব্যস্ততা, একঘেয়েমি, একাকিত্ব থেকে প্রাণবন্ত করে ফেলার এক অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে হল ফিস্টের। সম্প্রতি হৈহুল্লোড় আর আনন্দের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ঐতিহ্যবাহী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের ‘হল ফিস্ট’ দিয়ে শেষ করেছেন ২০২৪ সাল।
এবারের ফিস্টের নাম ছিল ‘The Royal Unveiling’ এবং থিম হিসেবে ছিল একটি মমি, যা সামনের হুমকিময় জীবনের একটি প্রতীকী। ফিস্ট মানেই আনন্দ, হাসি, ঘোরাঘুরি, সিনিয়র-জুনিয়রের মধ্যে বন্ধন আরও মজবুত করা।
‘Unity in diversity, strength in harmony’ স্লোগানকে সামনে রেখে বিদায়ী বছরের শেষ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ইউনিক শোডাউন দিয়ে শুরু হয় সোহরাওয়ার্দী হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী দ্বারা আয়োজিত ফিস্টটি। শোডাউনটির থিম ছিল জুলাই বিপ্লব। সবাই একই ধরনের টি-শার্ট পরে পায়ে পায়ে তাল মিলিয়ে জুলাইয়ের চেতনাকে মনে গেঁথে নেন আরেকবার। ফিস্টের আনুষ্ঠানিক শুরুর বহু আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল এর প্রস্তুতি পর্ব। প্রথম বর্ষের সব শিক্ষার্থী বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্যা, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম ছাত্রদের সঙ্গে কেক কাটার মাধ্যমে ফিস্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। জুনিয়রদের সঙ্গে সিনিয়ররাও উচ্ছ্বাসের সঙ্গে ফিস্টে যোগ দেন। রাতে নাচ-গানের আসর মাতিয়ে রাখে সবাইকে।
ফিস্টটি যেন সবদিক থেকেই সবাইকে আকর্ষণ করেছে। হলের আলোকসজ্জা নজরকাড়ে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি ক্যাম্পাস-সংলগ্ন এলাকার সবাইকেই। লোকমুখে সব থেকে সেরা আলোকসজ্জার শিরোপা পায় হলটি। ফিস্টের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকালটি শুরু হয় সিনিয়র-জুনিয়র এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচের মাধ্যমে। আরেকদল সকাল থেকেই ব্যস্ত হয়ে যায় বিকেলের ফ্ল্যাশ মবের অনুশীলনে। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন-সংলগ্ন হেলিপ্যাডে ফ্ল্যাশ মবে পারফরম্যান্স করে প্রথম বর্ষের একদল শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা-পরবর্তী আবার নাচের আসর বসানো হয় কেআর মার্কেটে। পরে রাতে অনুষ্ঠিত হয় গ্র্যান্ড ডিনার। এ ডিনারে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের সিনিয়রদেরও আমন্ত্রণ করেন।
শনিবার ছিল হল ফিস্টের শেষ দিন। দিনটির শুরু হয় রং খেলার মাধ্যমে। সবাই মেতে ওঠেন একই আমেজে। বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন ছিল ওইদিন বিকেলে। রাতে অনুষ্ঠিত হয় কালচারাল নাইট। সংগীত, নাচ, কৌতুক আর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল র্যাফেল ড্রর মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী হলের তিন দিনের জমকালো এই ফিস্ট। ফিস্ট সম্পর্কে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মিজান অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা অনেক ভালো একটা ফিস্ট করতে পেরেছি। জাঁকজমক ছিল সবকিছু। ভার্সিটি ছেড়ে গেলে এটাই সবচেয়ে বেশি মনে পড়বে।’ v