আমেরিকা অনেকের কাছে স্বপ্নের দেশ, যেন চাঁদের মতো রহস্যময় আর আকর্ষণীয়। সেখানে জীবনের রঙিন ঝলকানিতে মানুষ মুগ্ধ হয়। কতই না সুন্দর আর লোভনীয় মনে হয় এই দেশ! যদি একবার সেখানে যাওয়া যেত, তবে কেমন হতো! কিন্তু সেই স্বপ্ন কি বাস্তবে সম্ভব? এজন্য আমেরিকা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ আমেরিকা উন্নত জীবনযাত্রার প্রতীক। আকাশচুম্বী ভবন, চওড়া রাস্তা, ঝলমলে শহর, উন্নত শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং আধুনিক প্রযুক্তি—সব মিলিয়ে এটি এক বিস্ময়কর দেশ। যারা উন্নত জীবন এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন, তাদের কাছে আমেরিকা এক আলোকবর্তিকা।

তবে এই স্বপ্নের দেশের বাস্তবতা একটু ভিন্ন। উন্নয়নের আড়ালে লুকিয়ে আছে বর্ণবাদ, বৈষম্য, অর্থনৈতিক অসাম্য, অস্ত্রের কালোবাজার এবং বন্দুকের সহিংসতার মতো চ্যালেঞ্জ। তবুও মানুষের স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষার কাছে আমেরিকা এখনো চিরআকর্ষণীয়। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আমেরিকা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আমেরিকার ভিসা বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে সহজে পাওয়া যায়, যার মধ্যে শিক্ষা ক্যাটাগরি সবচেয়ে জনপ্রিয়। কর্মসংস্থান ভিত্তিক ভিসাগুলিকে “ইমপ্লয়মেন্ট-বেসড” (ইবি) সিরিজ বলা হয়। যারা স্থায়ীভাবে চাকরির ভিসা পেতে চান, তাদের ইবি-১ থেকে ইবি-৫ ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে হবে।

  • ইবি-১: অসাধারণ দক্ষতা বা গবেষণায় বিশেষ দক্ষতা থাকলে এই ভিসার জন্য আবেদন করা যায়।
  • ইবি-২: উচ্চতর শিক্ষা বা ব্যতিক্রমী দক্ষতা থাকলে এবং আমেরিকার কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকরির অফার থাকলে এই ভিসার জন্য যোগ্য হবেন।
  • ইবি-৩: দক্ষ কর্মী বা পেশাদারদের জন্য, যেখানে আমেরিকার কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকরির অফার আবশ্যক।
  • ইবি-৪: বিশেষ অভিবাসীদের জন্য, যেমন ন্যাটোর সাবেক কর্মী, চিকিৎসক, ধর্মীয় কর্মী, বা স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্য।
  • ইবি-৫: উদ্যোক্তাদের জন্য, যেখানে কমপক্ষে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ এবং ১০ জন মার্কিন নাগরিকের কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে।
  • কর্মসংস্থান ভিসা: আমেরিকার কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাকরির অফার পেতে হবে।
  • পরিবার বা স্পাউস ভিসা: আমেরিকায় বসবাসরত পরিবারের কোনো সদস্যের মাধ্যমে আবেদন করা যায়, সদস্যকে অবশ্যই আমেরিকান নাগরিক হতে হবে।
  • স্টুডেন্ট ভিসা: পড়াশোনার উদ্দেশ্যে আবেদন করা যায়। পড়াশোনা চলাকালীন চাকরির অফার পেলে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • রাজনৈতিক আশ্রয়: আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের মাধ্যমে অভিবাসন।
  • ডাইভার্সিটি ভিসা লটারি: প্রতি বছর লটারির মাধ্যমে অভিবাসী নেওয়া হয়। যদিও বাংলাদেশীদের জন্য এটি বর্তমানে বন্ধ।

এইসব ক্যাটাগরির মাধ্যমে আপনি আমেরিকায় যাওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারেন।

আরও পড়ুন: ইউরোপের ধনী দেশের তালিকা

আমেরিকার গ্রিন কার্ড পাওয়ার উপায়

আমেরিকার নাগরিকত্ব অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো গ্রিন কার্ড অর্জন করা। গ্রিন কার্ড, যা “স্থায়ী বসবাসের অনুমতি” হিসেবেও পরিচিত। এটি আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাস ও কাজ করার অধিকার প্রদান করে থাকে। এটি একটি বিশেষ ধরনের প্লাস্টিকের কার্ড, যার রং সবুজ হওয়ার কারণে এটি “গ্রিন কার্ড” নামে পরিচিত।

গ্রিন কার্ড পাওয়ার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট একটি ভিসা ক্যাটাগরির অধীনে আমেরিকায় প্রবেশ করতে হবে। এরপর একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত দেশটিতে বসবাস করতে হবে। এই সময়সীমা পূরণের পর গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আবেদন করার আগে আপনাকে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।

এর মধ্যে অন্যতম শর্ত হলো মার্কিন আইন ও নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে মেনে চলা। গ্রিন কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া জটিল হলেও এটি আমেরিকার নাগরিকত্ব অর্জনের একটি প্রধান ধাপ এবং দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ নিশ্চিত করে থাকে।

যেকোনো দেশের ভিসা প্রসেসিং, বেতন ও খরচ সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়তে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন: কুয়েত বেতন কত

Shares:
Leave a Reply