গুগল এক্স-এর তারা চিপ

গুগল এক্স, যা এখন X নামে পরিচিত, তাদের ‘মুনশট ফ্যাক্টরি’-র আওতায় ক্রমাগত উদ্ভাবনী প্রকল্প নিয়ে কাজ করে আসছে। সম্প্রতি তারা তাদের নতুন তারা চিপ উন্মোচন করেছে। এই চিপটি আঙ্গুলের নখের মতো ছোট হলেও এর প্রযুক্তিগত ক্ষমতা এবং সম্ভাবনা ব্যাপক।

তারা চিপের মূল লক্ষ্য হল প্রচলিত ফাইবার অপটিকের পরিবর্তে আলো বীমার মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা। যেখানে তারা লাইটব্রিজে মিরর, সেন্সর ও অন্যান্য যান্ত্রিক উপাদান ব্যবহার করা হত, সেখানে নতুন চিপে সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত অপটিক্যাল ফেজড অ্যারে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

পরীক্ষামূলক পর্যায়ে দেখা গেছে, দুইটি তারা চিপের মধ্যে ১ কিলোমিটার দুরত্বে ১০ জিবিপিএস (গিগাবিট প্রতি সেকেন্ড) গতিতে ডেটা প্রেরণ করা সম্ভব। এই প্রযুক্তি প্রচলিত ফাইবার অপটিক সংযোগের মতোই দ্রুত হলেও, এর স্থাপন প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত, কম খরচে এবং কম জটিলতা সম্পন্ন।

প্রচলিত ফাইবার অপটিক সংযোগ উচ্চগতির হলেও, অনেক স্থানে তা স্থাপন করা কঠিন। শহরের ব্যস্ত এলাকা, পাহাড়ি বা দূরবর্তী গ্রামাঞ্চলে ফাইবার বিস্তার করা ব্যয়বহুল ও প্রায়ই অসম্ভব। তারা চিপের প্রযুক্তি এই সমস্যা দূর করতে সহায়ক—আলো বীমা আকাশের মধ্য দিয়ে প্রেরণ করা যায়, যা কোনো অবকাঠামোর জটিলতা ছাড়াই দ্রুত ইন্টারনেট প্রদান করে।

বর্তমানে তারা প্রকল্পটি ১২ টিরও বেশি দেশে পরীক্ষামূলক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পরিচালিত হচ্ছে। এমন অনেক অঞ্চলে যেখানে ফাইবার সংযোগ স্থাপন ব্যয়বহুল, তারা চিপ সস্তা ও দ্রুত সমাধান হিসেবে কাজ করছে। ভবিষ্যতে, এই প্রযুক্তি বৃহৎ মেশ নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে ডেটা সেন্টার, স্বয়ংচালিত যানবাহন এবং অন্যান্য উচ্চপ্রযুক্তি ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হতে পারে।

গুগল এক্স-এর তারা চিপ উদ্ভাবনী প্রযুক্তির এক অসাধারণ উদাহরণ। ছোট আকারে বিশাল ক্ষমতা থাকা এই চিপটি ভবিষ্যতের ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে আলো বীমার মাধ্যমে দ্রুত, সস্তা ও কার্যকর সমাধান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। আশা করা হচ্ছে, এটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে এবং তথ্যপ্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচনে সহায়ক হবে।

তো আজ এই পর্যন্তই। ভালো থাকবেন। বিদায়।

Shares:
Leave a Reply