সময়টা এখন টেকনোলজির যুদ্ধের। আর এই যুদ্ধে অস্ত্র হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির পণ্য আইফোন, ল্যাপটপ, স্মার্টঘড়ি কিংবা মিসাইল কন্ট্রোলিং চিপ। তবে যুদ্ধের অন্যতম হেভিওয়েট খেলোয়াড় দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন। এই দুই পরাশক্তির সংঘাতে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খাচ্ছে একসময়কার নির্ভরযোগ্য উৎপাদন মিত্রতা। সেই সম্পর্কেই আজ আলোড়ন তুলেছে এক বিস্ফোরক ঘোষণা চীনে তৈরি আইফোন আর যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবে না!
এটা শুধু একটা ফোন নিষিদ্ধ করার খবর না। বরং এর ভেতরে লুকিয়ে আছে ট্রিলিয়ন ডলারের ভোক্তা বাজার, গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনের বড়সড় রদবদল এবং টেকনোলজির নতুন উৎপাদন শক্তির অভ্যুদয়। কিন্তু সবচেয়ে অবাক করা বিষয়? এই জটিল, হাই-টেক যুদ্ধের পটভূমিতে এখন বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হচ্ছে!
চীনকে পিছনে ফেলে অ্যাপলের ইউটার্ন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন জো বাইডেন নেতৃত্বে শুরু হওয়া চীনা পণ্যের ওপর কড়া শুল্ক নীতি এখনো দাগ কেটে আছে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই চীন থেকে আসা প্রযুক্তিপণ্যের ওপর লাগালেন চড়া শুল্ক। আর এতেই যেন খেই হারাল অ্যাপলের মতো কোম্পানিগুলো। শুধু যে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেল তাই না, বরং তাদের এক প্রান্তিকে ৯০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচের আশঙ্কা তৈরি হলো।
এমন পরিস্থিতিতে অ্যাপলের সিইও টিম কুক আর দেরি করেননি। তিনি ঘোষণা দিলেন, আগামী মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে বাজারজাত হওয়া প্রতিটি আইফোনই উৎপাদিত হবে ভারতের মাটিতে। আর আইপ্যাড, অ্যাপল ওয়াচ এসব হবে ভিয়েতনামে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অ্যাপলের এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি কৌশলগত পদক্ষেপ না, বরং এটি একটি সুপরিকল্পিত বৈশ্বিক রি-অ্যালাইনমেন্ট। কারণ তারা এখন একদিকে চীনের উপর নির্ভরতা কমাচ্ছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের রাজনৈতিক চাপও সামলাচ্ছে।
অ্যাপলের ৫০০ বিলিয়ন ডলারের গেম প্ল্যান
এখানেই শেষ না। গত ১ মে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এক আলোচনায় টিম কুক জানালেন, পরবর্তী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে অ্যাপল। তাদের লক্ষ্য চীনের বিকল্প তৈরি করা, সেটাও এমনভাবে, যাতে ট্রাম্পের মতো প্রশাসনের চোখেও তারা নিজেদের দেশপ্রেমিক প্রমাণ করতে পারে।
বিবিসি-র Today প্রোগ্রামে এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন শান্তি কেলেমেন, যিনি M&G Wealth-এর প্রধান। তার ভাষায়, শুল্কের কারণে এখন সরবরাহ চেইন নিয়ে যে অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে, তাতে নতুন কারখানা স্থাপন অত্যন্ত ব্যয়বহুল হলেও, দীর্ঘমেয়াদে সেটিই নিরাপদ পথ।
কিন্তু এই বদলে যাওয়া গেম প্ল্যানে এক নতুন প্রশ্ন সামনে এসেছে ভারত এবং ভিয়েতনাম তো আছেই, তবে তৃতীয় কোনও দেশ কি পারবে এই যুদ্ধে নিজের অবস্থান তৈরি করতে?
বাংলাদেশ নতুন এক সম্ভাবনার নাম?
হ্যাঁ, এই প্রশ্ন এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। কারণ মার্কিন-চীন টেকযুদ্ধের গতি এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যেখানে অ্যাপলের মতো গ্লোবাল ব্র্যান্ডও নতুন নতুন উৎপাদন কেন্দ্র খুঁজতে বাধ্য হচ্ছে। এই খোঁজের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ!
একটা সময় আমরা শুধু পোশাক রপ্তানির দেশ হিসেবে পরিচিত ছিলাম। এখন সেই বাংলাদেশেই আইফোন উৎপাদনের সম্ভাবনা আলোচনার কেন্দ্রে।
New York Times-এ ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন বিরল মৌল (rare earth metals) রপ্তানি নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। এই ধাতুগুলোর ওপর নির্ভর করেই তৈরি হয় মোবাইল, ল্যাপটপ, হাইব্রিড গাড়ি, এমনকি মিসাইল সিস্টেম পর্যন্ত। ফলে চীনের এই সিদ্ধান্ত একরকম ভয় ধরিয়ে দিয়েছে মার্কিন কোম্পানিগুলোর মাঝে। তারা এখন যেকোনও মূল্যে বিকল্প পথ খুঁজছে।
এখানেই বাংলাদেশ পেল এক সুবর্ণ সুযোগ।
বাংলাদেশে বিরল খনিজের সন্ধান!
বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (GSB) প্রায় দুই দশক ধরে খনিজ অনুসন্ধানে কাজ করে আসছে। তাদের গবেষণায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদীর বালি, জেগে ওঠা চর এবং কয়লা খনি থেকে বিরল খনিজের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বিশেষ করে গাইবান্ধা জেলার যমুনা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে খনিজ আহরণ শুরু করেছে একটি অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি Ever Last Minerals। তারা প্রাথমিকভাবে বাণিজ্যিকভাবে ভারী খনিজ সংগ্রহ শুরু করেছে প্রায় ২,৩৯৫ হেক্টর এলাকাজুড়ে। অন্যদিকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতেও এই বিরল খনিজের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে।
প্রতিটি কেজি কয়লায় ১০০ মিলিগ্রাম বিরল খনিজ থাকলে সেটিকে অর্থনৈতিকভাবে উত্তোলনযোগ্য হিসেবে ধরা হয়। বড়পুকুরিয়ার কয়লায় পাওয়া যাচ্ছে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি। এটি শুধু চমকে দেওয়ার মতো তথ্য নয়, বরং টেক জায়ান্টদের জন্য স্বপ্নের সুযোগ।
মেইড ইন বাংলাদেশ আইফোন স্বপ্ন না বাস্তবতা?
এই মুহূর্তে হয়তো শোনা যায় ভারতই হবে পরবর্তী আইফোন উৎপাদনের ঘাঁটি। তবে ভারতকে কেন্দ্র করেও রয়েছে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা। যেমন, উচ্চ কর কাঠামো, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং সময়সাপেক্ষ নির্মাণ প্রক্রিয়া।
অন্যদিকে বাংলাদেশ এখন চীন প্লাস ওয়ান কৌশলের উপযোগী একটি দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। আমাদের কম খরচের শ্রমশক্তি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সরকারপ্রদত্ত কর ছাড় সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য এটা একটি লোভনীয় ঠিকানা হয়ে উঠছে।
বিশ্লেষক প্যাট্রিক মুর হেড, যিনি Moor Insights & Strategy-এর প্রধান, বলেন (আইফোনের উৎপাদন সরিয়ে নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত অ্যাপল নিয়েছে, তা কেবল একটি কৌশলগত পালাবদল নয়। এটি একটি ঐতিহাসিক ধাপ। এখন বাংলাদেশ যদি উৎপাদনের মতো উচ্চমানের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারে, তাহলে তারা একেবারে সামনে চলে আসবে।)
চীনের তৈরি আইফোন নিষিদ্ধের এই পরিপ্রেক্ষিতে এখন প্রশ্ন একটাই বিকল্প উৎপাদনের এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুত? এর উত্তর খুঁজতে গেলে একদিকে যেমন আমাদের খনিজ সম্পদের প্রাচুর্যকে গুরুত্ব দিতে হয়, তেমনি দেখতে হয় উৎপাদন সক্ষমতা, আইনি কাঠামো ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ।
বাংলাদেশকে ঘিরে অ্যাপলের চোখে আকর্ষণীয় বাস্তবতা
২০২৪ সালের শেষের দিকে অ্যাপলের একটি বিশেষজ্ঞ দল গোপনে ঢাকা সফর করে। এই দলটি মূলত সম্ভাব্য উৎপাদন স্থান, শ্রম ব্যয়, কর সুবিধা ও কাঁচামালের প্রাপ্যতা বিশ্লেষণ করে যায়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা এ বিষয়ে মুখ খোলেনি, তবে Reuters, CNBC এবং Nikkei Asia এর একাধিক রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, অ্যাপল alternative manufacturing ecosystem গঠনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে বিবেচনায় রেখেছে।
বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই সামস্যাং, শাওমি, ওপো, ভিভো এইসব বহুজাতিক স্মার্টফোন ব্র্যান্ড নিজেদের উৎপাদন কারখানা স্থাপন করেছে। ২০২৪ সালে মাত্র ১২ মাসে দেশে উৎপাদিত স্মার্টফোনের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩৭ লাখ, যার মধ্যে ৬৫%-ই রপ্তানি উপযোগী। আর এই রপ্তানির সিংহভাগ গিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বাজারে।
এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশ শুধু শ্রম-নির্ভর নয়, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং উৎপাদন নির্ভুলতায়ও অভ্যস্ত হয়ে উঠছে।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সরকারি উদারতা, বাংলাদেশের ট্রাম্পকার্ড
যেখানে ভারত বা ভিয়েতনামে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কিংবা আঞ্চলিক সংঘাত বড় প্রতিবন্ধকতা, সেখানে বাংলাদেশ গত এক দশকে একটি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলেছে। BIDA (বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি) এখন One-Stop Service চালু করেছে, যেখানে একজন বিদেশি বিনিয়োগকারী এক ক্লিকে নিজের কারখানা অনুমোদন, জমি বরাদ্দ, ট্যাক্স ছাড় এবং বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে পারে।
শুধু তাই না, তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনকারীদের জন্য ১০ বছরের কর মওকুফ, সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত যন্ত্রাংশ আমদানির সুবিধা, এবং বিশেষ রপ্তানি প্রণোদনা এসব নীতিমালা বাংলাদেশকে আরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক করে তুলেছে।
এখানেই যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিনিয়োগকারী এখন আগ্রহ দেখাচ্ছে। US Chamber of Commerce গত মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম উদীয়মান প্রযুক্তি উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে উঠছে। এই অঞ্চলটিতে বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ সবচেয়ে উজ্জ্বল।
অ্যাপলের সাপ্লাই চেইন চীনের অবনতি, বাংলাদেশের সম্ভাবনা
অ্যাপলের সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন ‘সাপ্লাই চেইন ফ্র্যাজিলিটি’। অর্থাৎ, তাদের বর্তমান উৎপাদন অবকাঠামো এককেন্দ্রিক হওয়ায় (মূলত চীনের ওপর নির্ভরশীল) তারা কোনো রাজনৈতিক বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে অ্যাপল এখন তাদের উৎপাদন ঘাঁটি ছড়িয়ে দিতে চাইছে ৩টি অঞ্চলে:
- ভারত: আইফোন অ্যাসেম্বলির কেন্দ্র
- ভিয়েতনাম: আইপ্যাড ও ওয়াচের উৎপাদন
- বাংলাদেশ (প্রস্তাবিত): চিপ ও খনিজ উপাদানের প্রাথমিক প্রস্তুতিপর্ব এবং কিছু mid-tier অ্যাসেম্বলি লাইন
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি বাংলাদেশ এই সুযোগে নিজেদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়নে মনোযোগ দেয়, তাহলে এই তিন স্তরীয় সাপ্লাই চেইনের নতুন ভারসাম্য গড়ে উঠবে। যেখানে চীন থাকবে না, বরং থাকবে ভারত, ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশ।
দেশের প্রযুক্তি খাতের বাস্তবতা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার সমান্তরাল পথ
বাংলাদেশের প্রযুক্তি উৎপাদন খাত এখনও গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে অস্থিরতা, দক্ষ প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের ঘাটতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় নির্ভরযোগ্যতার অভাব এই চ্যালেঞ্জগুলো এখনো স্পষ্ট। তবে দেশজুড়ে যেসব হাই-টেক পার্ক এবং শিল্প অঞ্চল গড়ে উঠছে, সেগুলোর কিছু ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নজরে পড়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক ঘোষণা থাকলেও তার বাস্তব বাস্তবায়ন এখনও অনেকটাই সীমিত।
তবে আশার কথা জনগণের মাঝে প্রযুক্তি গ্রহণের আগ্রহ, তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী মনোভাব, এবং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের সম্ভাব্যতা সব মিলিয়ে আগামী দিনে এই খাতেও উত্থানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বাংলাদেশ কি অ্যাপলের জন্য (নেক্সট চায়না) হতে পারবে?
এই প্রশ্নের উত্তর এখনো ভবিষ্যতের গর্ভে। তবে যে বাস্তবতাগুলো দৃশ্যমান:
- বিরল খনিজে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে
- শ্রম খরচ অত্যন্ত কম
- রাজনৈতিক পরিবেশ তুলনামূলক শান্ত
- প্রযুক্তিগত উৎপাদন দক্ষতা ধীরে ধীরে বাড়ছে
- আমদানির ওপর কর ছাড় এবং রপ্তানিতে প্রণোদনা আকর্ষণীয়
- পশ্চিমা দুনিয়ায় চীনের প্রতি অনাস্থা বাড়ছে
এই উপাদানগুলো একত্রে বাংলাদেশের সামনে এক বিরল ইতিহাসগড়া সুযোগ এনে দিয়েছে।
আর সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশের জনগণের মাঝেও এখন প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ ও আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই। দেশের তরুণরা আজ অ্যাপ ডেভেলপার থেকে শুরু করে হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সকল ক্ষেত্রেই নিজেদের দক্ষতা দেখাচ্ছে।
শেষ কথা:
চীনের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা যদি স্থায়ী হয়, আর অ্যাপল যদি সত্যিই বহুমুখী উৎপাদনে অগ্রসর হয়, তাহলে বাংলাদেশে তৈরি আইফোন আর কোনো কল্পনা নয়। বরং সেটা হতে পারে প্রযুক্তি খাতে আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্জন।
তবে সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে গেলে এখনই প্রয়োজন:
- বিনিয়োগ-বান্ধব অবকাঠামো
- দক্ষ মানবসম্পদ গঠনে দ্রুত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম
- বিদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য এক জানালা সুবিধা
- বিদ্যুৎ ও পরিবহন অবকাঠামোর আধুনিকায়ন
- বিশ্বমানের শিল্প পার্কে উন্নয়ন
এই পদক্ষেপগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারলে, হয়তো আগামী দশকে আপনি-আমি হাতে যেই আইফোনটি ধরব, তার গায়ে লেখা থাকবে Assembled in Bangladesh।
আর সেই এক লাইনেই লেখা থাকবে এক দেশের সাফল্যের গল্প যেখানে এক সময় পোশাক তৈরি হতো, এখন তৈরি হচ্ছে সিলিকন চিপ!