চ্যাটজিপির মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিল মেটা! আসলো ‘স্বতন্ত্র’ এমন এআই, যাকে দেখে OpenAI সহ সব প্রতিদ্বন্দ্বী কাঁপছে ভয়ে
একটা সময় ছিল, যখন চ্যাটজিপিটি নামটা মানেই ছিল এআই দুনিয়ার একচ্ছত্র আধিপত্য। যেন কেউ জিজ্ঞেস করলেই মুখের সামনে একটাই উত্তর চ্যাটজিপিটি করেই দেখো। কিন্তু সেই সময়টা হয়তো এবার সত্যিই বিদায় নিতে যাচ্ছে। এমন এক ঘটনা ঘটেছে, যা দেখে প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় খেলোয়াড়রাও ভীত, চিন্তিত, আর বলতে গেলে একটু একটু কাঁপছেও।
২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল। সময়ের ধারায় হয়তো একটা সাধারণ দিন, কিন্তু প্রযুক্তির ইতিহাসে এই দিনটা হয়তো একদিন পাঠ্যবইয়ে উঠবে। কারণ এই দিনেই মেটা এক ঘোষণার মাধ্যমে প্রযুক্তি জগতের জমাটপড়া ভারসাম্যকে এক লাফে নাড়িয়ে দিলো। সেই ঘোষণাটা এমন এক সফটওয়্যারকে নিয়ে, যা শুধু আরেকটা এআই নয়, এটা এক বিপ্লব। মেটা তাদের প্রথম ‘স্বতন্ত্র’ AI অ্যাপ উন্মোচন করলো একটা ব্যক্তিগত AI সহকারী, যার নাম এখনো না জানা থাকলেও, ক্ষমতা আর দৃষ্টিভঙ্গি দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটি চ্যাটজিপিটির জন্য এক ভয়ঙ্কর প্রতিদ্বন্দ্বী হতে চলেছে।
“মেটা” এবার শুধু কথা বলছে না, কাজ দেখিয়ে দিচ্ছে!
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওতে মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ বলেন, (এখন আমাদের অ্যাপগুলোতে এক বিলিয়নের বেশি মানুষ মেটা এআই ব্যবহার করছেন।) এ যেন শুধু একটা সংখ্যা নয় এটা এক বিশাল সেনাবাহিনী। আর সেই সেনাবাহিনীর জন্য এবার তৈরি হলো একটা স্বতন্ত্র কমান্ড সেন্টার, নতুন এআই অ্যাপ।
এই এআই কেবল প্রশ্নের উত্তর দেবে না, বরং কথা বলবে আপনার সঙ্গে, হাসবে, থেমে যাবে, আবার শুরু করবে। ফোন কলে বন্ধুর সঙ্গে যেমন কথা বলেন, তেমনই অভিজ্ঞতা দেবে মেটার এআই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রথমবারের মতো ‘মানবিকতা’র সংজ্ঞা ধরার চেষ্টা করছে, আর সেই চেষ্টাটা একেবারে ভেতর থেকে, গভীর পর্যায় থেকে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু এনজি যেমন বলেছিলেন (The next wave of AI won’t just be smart. It’ll be social) মেটা যেন সেই কথারই প্রতিধ্বনি করছে এই অ্যাপের মাধ্যমে।
এই এআই আর যন্ত্র নয়, এ যেন এক বন্ধুর ছায়া…
ক্রিস কক্স, মেটার প্রধান পণ্য কর্মকর্তা, জানিয়েছেন এই এআই শুধু আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবে না। এটি আপনার স্মৃতির রক্ষক হবে, আপনার স্ত্রীর জন্মদিন, সন্তানের প্রিয় খেলনা, এমনকি আপনার জীবনের ছোট ছোট ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলোও মনে রাখবে। ভাবুন তো, আপনি কাজের চাপে ভুলে গেছেন বিবাহবার্ষিকী, আর হঠাৎই মেটার এআই আপনাকে মনে করিয়ে দিল (আজ আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনের একটি!) এটা কি কেবল সফটওয়্যার? নাকি এক মানবিক ছোঁয়া?
এই এআই ভয়েস চ্যাটেও পারদর্শী, এবং তার কথোপকথনের স্টাইল এমন যে আপনি বুঝতেই পারবেন না, এটা আসলে একটি মেশিন! AI গবেষণায় এই জায়গাটা এতদিন খালি ছিল। চ্যাটজিপিটি যেমন নিরেট পাঠ্য, রোবোটিক রিপ্লাই দিয়ে যাচ্ছে, সেখানে মেটা এনেছে প্রাণ। আপনি বললেন, সে শুনল, থেমে থাকল, হাসল তারপর বলল, (তুমি কি নিশ্চিত এটা করতে চাও?) এমনভাবে, যেন সত্যি কোনও মানুষ আপনাকে প্রশ্ন করছে।
চ্যাটজিপিটির জন্য বাজছে কি তবে বিদায় ঘণ্টা?
এখন প্রশ্ন এই অবস্থায় OpenAI কি কেবল বসে থাকবে? একদমই না। চ্যাটজিপিটি নিয়মিত ফিচার যোগ করে চলেছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, OpenAI এখনো পুরোপুরি ‘ক্লোজড’ মডেল নিয়ে কাজ করছে, যেটার সবকিছুই গোপন। আপনি জানতেই পারবেন না চ্যাটজিপিটির ভেতরে ঠিক কীভাবে কাজ চলছে।
এখানেই মেটার এআই বাজিমাত করে দিয়েছে। মেটা তাদের এআই মডেল LLaMA কে করেছে ওপেন সোর্স। মানে, আপনি একজন ডেভেলপার হিসেবে চাইলে এই এআই এর কোড নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারবেন, পরিবর্তন করতে পারবেন, এমনকি নিজের ব্যক্তিগত এআই তৈরি করতেও পারবেন এই ভিত্তির উপর! আপনি আর নির্ভর করে থাকবেন না শুধু OpenAI-র সদয় অনুমতির ওপর। এটি সম্পূর্ণ স্বাধীনতার নামান্তর।
জাকারবার্গ নিজে এই বিষয়টি নিয়ে বলেন (ওপেন সোর্স মডেলের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো, আপনি চাইলে বিভিন্ন মডেল থেকে সেরা উপাদানগুলো মিলিয়ে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী একটি এক্সক্লুসিভ এআই তৈরি করতে পারবেন। এটা ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা।)
এটা ঠিক এই বক্তব্যটাই চ্যাটজিপিটির প্রতিষ্ঠাতাদের কাঁপিয়ে তুলেছে। কারণ এটি কেবল টেকনোলজির প্রশ্ন নয়, এটি ক্ষমতার প্রশ্ন।
মেটা কি তবে ‘সামাজিক এআই বিপ্লব’-এর জন্ম দিলো?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আমাদের নতুন মেটা এআই অ্যাপটির আরও কিছু ইন্টারেস্টিং দিক জানতে হবে।
মেটা এই অ্যাপের মধ্যে যুক্ত করেছে একটি ‘সোশ্যাল ফিড’। মানে, আপনি শুধু এআই-এর সঙ্গে কথা বলবেন না, বরং অন্যদের তৈরি এআই-ভিত্তিক পোস্টগুলো দেখতে পাবেন। আপনি কারো প্রম্পট দেখে অনুপ্রাণিত হতে পারেন, কিংবা নিজের সৃষ্টিকর্ম শেয়ার করতে পারেন। এই জায়গাটা চ্যাটজিপিটি কিংবা গুগলের বার্ডে একদম অনুপস্থিত।
একটু চিন্তা করুন, যখন মেটার প্ল্যাটফর্মে আপনি চ্যাটবট তৈরি করছেন, কথা বলছেন, আর সেই কথোপকথন বা আর্টওয়ার্ক অন্যরা দেখে শিখছে, আপনার সঙ্গে কানেক্ট করছে, তখন এই এআই কেবল টেকনোলজিক্যাল টুল নয়, এটা একটা সামাজিক আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে।
ক্রিস কক্স এই অংশটা ব্যাখ্যা করে বলেন (আমরা চাই এআই হোক এমন কিছু, যা মানুষ একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করতে পারে, শেখাতে পারে। ঠিক যেমন আমরা জীবনে একে অপরের কাছ থেকে শিখি।) এই কথার পেছনে আছে এক বিশাল দর্শন। এআই এখন আর শুধু যন্ত্র নয়, এটি সামাজিকতাকে ধারণ করছে।
মেটা ভিউ এর অবসান, শুরু নতুন যুগের!
নতুন এই অ্যাপটি আসলে জায়গা নিচ্ছে পুরোনো ‘মেটা ভিউ’ অ্যাপের। আগে এই অ্যাপটি মূলত রে-বেন স্মার্ট চশমার সঙ্গে ব্যবহৃত হতো। এখন সেই অ্যাপই এক্সপ্যান্ড হয়ে দাঁড়াচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ এআই ইকোসিস্টেমে। আপনি চাইলে রে-বেন স্মার্ট গ্লাস, ফোন এবং ডেস্কটপ তিনটির সঙ্গেই এই নতুন মেটা এআই-এর সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন।
মানে, আপনি বাসার বাইরে হাঁটছেন, চশমায় কথা বলছেন মেটার এআই-এর সঙ্গে, তারপর বাসায় ফিরে ঠিক সেখান থেকেই কথোপকথন চালিয়ে যেতে পারছেন মোবাইলে বা ডেস্কটপে। এটা কল্পবিজ্ঞান নয়, এটা বাস্তব!
এটা এমনই এক নতুন যুগের সূচনা, যেখানে আপনি আর এআই-এর সঙ্গে কাজ করছেন না, বরং আপনি এআই-এর সঙ্গে একসঙ্গে বাঁচছেন।
গুগল, OpenAI, এমনকি অ্যাপলও পড়েছে দুশ্চিন্তায়!
মেটার এই ‘স্বতন্ত্র’ AI অ্যাপ প্রকাশের পরপরই প্রযুক্তি দুনিয়ার সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটা অদৃশ্য স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। একদিকে গুগলের Bard (এখন Gemini), অন্যদিকে OpenAI-এর চ্যাটজিপিটি। দুটোই তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে আরও ইউজার ফ্রেন্ডলি, আরও ইন্টেলিজেন্ট হতে। কিন্তু মেটা যেভাবে একটা এআই-কে সামাজিক প্ল্যাটফর্মের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছে, সেটা একদমই নতুন ও ভিন্ন পথ।
প্রযুক্তি বিশ্লেষক বেন থম্পসন বলেন, (মেটা আসলে বুঝে ফেলেছে, AI কেবল তথ্যপ্রদানকারী নয়, AI এখন ‘অন্তরঙ্গ’ সহচর হতে যাচ্ছে। এটা এমন এক জায়গা, যেখানে গুগল আর OpenAI কখনোই নিজেদের তৈরি করেনি।)
গুগল যে এখন কতটা টেনশনে, তার প্রমাণ তারা হঠাৎ করেই আগামী মাসে নতুন Gemini 2.5 Pro মডেল ও তাদের AI পোর্টালের পূর্ণ সংস্করণ আনছে। অন্যদিকে, OpenAI ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে চ্যাটজিপিটির ভয়েসচ্যাট খুব শীঘ্রই হিউম্যান লাইক ইন্টার্যাকশন দিতে পারবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, মেটা ইতিমধ্যেই সে জায়গায় পৌঁছে গেছে।
মেটা তাদের এআই অ্যাপের মাধ্যমে একটা বিষয় পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছে AI এখন আর কেবল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নয়, এটা এখন কৃত্রিম অনুভূতির সহযাত্রী।
জেনারেটিভ মিডিয়ার জগতে বিপ্লব! AI এখন শিল্পী, গল্পকার আর সিনেমাটোগ্রাফার
মেটার নতুন AI অ্যাপ শুধু কথা বলতেই পারে না, এটা এখন চিত্রশিল্প তৈরি করতে পারে, ভিডিও জেনারেট করতে পারে, এমনকি আপনি যে গল্প বলছেন তা সরাসরি স্ক্রিপ্ট আকারে রূপ দিতে পারে। আপনি বললেন:
(একটা গল্প বানাও, যেখানে একজন অন্ধ ছেলের সঙ্গে একজন রোবটের বন্ধুত্ব হয়।)
মেটার AI এক মুহূর্তেই সেই গল্প বানিয়ে দেবে, আর সঙ্গে সঙ্গে দেবে সেই গল্পের ছবি, এমনকি ভিডিওর স্টোরিবোর্ডও।
তুলনা করে দেখুন, চ্যাটজিপিটি এখনো স্ট্যাটিক ইমেজ তৈরির জন্য DALL·E-এর উপর নির্ভর করে। আর গুগল তো একেবারেই অ্যাভারেজ মানের চিত্র দেয়। কিন্তু মেটা এখন ইন্টারঅ্যাকটিভ GIF, ছোট ভিডিও, এমনকি ত্রিমাত্রিক এনিমেশনেও কাজ করছে।
এটা শুধুই প্রযুক্তি নয়, এটা এক ধরনের গল্প বলার নতুন ভাষা। যে ভাষায় ভবিষ্যতের চলচ্চিত্র, শিক্ষাব্যবস্থা, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াও বদলে যাবে।
কেন এই মুহূর্তে মেটার AI সবচেয়ে ‘ভয়ঙ্কর’ প্রতিদ্বন্দ্বী?
- ১. ওপেন সোর্স মডেল (LLaMA 3):
মেটা AI এর ভিত্তি হলো LLaMA যা এখন ওপেন সোর্স। মানে, আপনি চাইলে আপনার নিজের কোম্পানির জন্য, কিংবা নিজস্ব অ্যাপের জন্য এক্সক্লুসিভ AI অ্যাসিস্ট্যান্ট বানিয়ে ফেলতে পারেন এই মডেলের উপর ভিত্তি করে। চ্যাটজিপিটি বা গুগলের এআই আপনি শুধু ব্যবহার করতে পারেন, পরিবর্তন করতে পারেন না।
- ২. ভয়েস ইন্টারঅ্যাকশন:
মেটা AI এতটাই স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় কথা বলতে পারে, যেন আপনি আপনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন। সেটা কখনও মৃদু হাসি দিয়ে, কখনও থেমে গিয়ে চিন্তাভাবনার ভঙ্গিমায়। - ৩. অডিওভিজ্যুয়াল কনটেন্ট জেনারেশন:
আপনি যদি একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হন, তাহলে মেটা AI আপনার ভিডিও স্ক্রিপ্ট লিখে দিতে পারে, সেই ভিডিওর ইলাস্ট্রেশন তৈরি করতে পারে, এমনকি ভয়েসও দিতে পারে। - ৪. ইন্টিগ্রেশন উইথ হার্ডওয়্যার:
রে-বেন স্মার্ট চশমা, পোর্টাল ডিভাইস, এসবের সঙ্গে সরাসরি ইন্টিগ্রেটেড মেটার AI। এর ফলে শুধু মোবাইলে নয়, আপনার চারপাশেই ছড়িয়ে থাকবে এই বুদ্ধিমান সহচর।
চ্যাটজিপিটির নীরবতা ও পিছিয়ে পড়ার স্পষ্ট সংকেত
মেটার এই বিপ্লবী পদক্ষেপের পর চ্যাটজিপিটির আপডেট চুপচাপ।
GPT-5 এর ঘোষণা এখনও আসেনি, GPT-4 এখনও টেক্সট-বেইজড; ভয়েস নিয়ে যদিও কাজ হচ্ছে, কিন্তু সেই কাজের রেজাল্ট এখনও পরীক্ষামূলক।
সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে চ্যাটজিপিটি এখনও রিয়েলটাইম ওয়েব সার্চ দিতে পারে না, আবার পারলেও কখনো কখনো তা ১০০% স্যাটিসফাইট হয় না বিনামূল্যে।
অন্যদিকে, মেটার AI সরাসরি Bing-এর মাধ্যমে রিয়েলটাইম সার্চ রেজাল্ট দিয়ে আপনাকে আপডেট তথ্য দেয়। এটা শুধু প্রশ্নের উত্তর নয়, বরং টেকনোলজির বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরিতে বড় ফ্যাক্টর।
এই যুদ্ধের শেষ কোথায়?
আমরা এমন এক সময়ে প্রবেশ করছি, যেখানে প্রযুক্তির লড়াই আর কোডিংয়ের ভেতরে সীমাবদ্ধ নেই। এটি এখন মানুষের মন, অভ্যাস আর সম্পর্কের জগতেও ঢুকে পড়েছে।
মেটা যদি তাদের এআই অ্যাপ আরও মোবাইলবান্ধব করে, ইউজারদের জন্য পার্সোনালাইজড AI পার্সোনা তৈরি করার সুযোগ দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে মানুষের জীবনে ‘একটা প্রিয় AI বন্ধুর’ জায়গা তৈরি হতে বেশি সময় লাগবে না।
সেই সময়টা আসলে হয়তো এমন হবে, যেখানে AI শুধু প্রশ্নের উত্তর দেবে না, আপনার জীবনযাত্রার অংশ হয়ে উঠবে। আপনার হাসি, কান্না, স্বপ্ন, ভয় সব জানবে সে। আর তখন, চ্যাটজিপিটি বা গুগল নয়, আপনার কাছে সবচেয়ে কাছের এআইটি হবে সেই, যার হৃদয়ে আপনি নিজেকে খুঁজে পাবেন।
উপসংহার:
মেটা এবার তাদের এআই অ্যাপে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেটি নিছক কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবন নয়, এটা এক দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে AI হবে স্বাধীন, সামাজিক, এবং অনুভবযোগ্য। এই AI শুধু কথা বলবে না, কথা রাখবেও।
OpenAI হয়তো এখনও বড় নাম। গুগল হয়তো এখনো ক্ষমতার চূড়ায়। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী সবচেয়ে বড় বদল আসে নিঃশব্দ বিপ্লব থেকে। মেটা তাদের সেই বিপ্লব শুরু করে দিয়েছে। এখন সময়ের অপেক্ষা, এই বিপ্লব ছড়িয়ে পড়ে কি না পৃথিবীর প্রতিটি ফোনে, প্রতিটি মনে।
চ্যাটজিপিটির একচ্ছত্র আধিপত্যের দিন হয়তো শেষ হতে চলেছে। আর তার মৃত্যু-ঘণ্টা বাজাল যে প্রতিপক্ষ, তার নাম মেটা।
প্রশ্ন একটাই আপনি কি তৈরি এই নতুন যুগের জন্য?