টেকনাফে ১২ দিনে প্রায় ৫ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার: বিজিবি

টেকনাফে ১২ দিনে প্রায় ৫ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার: বিজিবি

সারাদেশ

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

2025-01-12

মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির গহযুদ্ধ চলছে। এর মধ্যেও দেশটি থেকে মাদক পাচার কমছে না। ফলে সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গত ১২ দিনে (১-১২ জানুয়ারি) টেকনাফ সীমান্ত-নাফনদের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এসময় গ্রেপ্তার করা হয় পাঁচ মাদক কারবারিকেও। 

রোববার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান।

বিজিবি-২ অধিনায়ক আশিকুর রহমান বলেন, ‘রোববার ভোরে মাদকের একটি বড় চালান পাচারের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দমদমিয়াস্থল নাফনদে তীরে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ২৫টি প্লাস্টিকের ব্যাগে থাকা ২ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। আমাদের মাদকবিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। আমরা ১২ দিনে প্রায় পাচঁ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাদক রোধসহ সীমান্তে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি খুব শক্ত অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গার পাশাপাশি কোন মাদক ঢুকতে না পারে সেজন্য বিজিবি রাত-দিন টহল অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া সীমান্তে সম্পূর্ণরুপে অপরাধ রোধে স্থানীয়দের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।’

বিজিবির তথ্য অনুসারে,  চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি ১ হাজার ৯৭০ পিস ইয়াবা, ৩ জানুয়ারি ৬ হাজার ইয়াবা, ৪ জানুয়ারি ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়াবা, ৬ জানুয়ারি ৯৬৫ পিস ইয়াবা, ১০ জানুয়ারি ৭৭৫ পিস ইয়াবা, ১২ জানুয়ারি ২ লাখ ৫০ হাজার উদ্ধার করেছে বিজিবি। এসব অভিযানে আটক হয়েছে পাঁচজন।

মাদক পাঠাচ্ছে আরাকান আর্মি!

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী তুমুল লড়াইয়ের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিজিপি ঘাঁটিগুলো এখন আরাকান আর্মির দখলে। ঘাঁটিগুলোতে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আরাকান আর্মির সদস্যরা। বিশেষ করে গত ৮ ডিসেম্বর রাখাইনে মংডু টাউনশিপ আরাকান আর্মির দখলের পর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্যে বন্ধ থাকলে সেদেশ থেকে মাদক আসা বন্ধ হয়নি।  

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা অভিযোগ করেন, ‘এখন আরাকান আর্মির সিন্ডিকেট করে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে মাদক পাচার করছে। তা না হলে সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার বন্ধ হচ্ছে না কেন?। এ বিষয়টি আমি জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় বলেছি। কেননা আরাকান আর্মি সম্প্রতি সময়ে রাখাইনে মংডু টাউশিপ দখলের পর থেকে মাদক পাচার বেড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘মূলত তারা (আরাকান আর্মি) মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু এবং মাদক পাঠাচ্ছে বাংলাদেশে। মাদকের টাকায় তার বিপরীতে বিভিন্ন কৌশলে সেদেশে (মিয়ানমার) চোরাচালালে পাচার হচ্ছে রসদসহ বিভিন্ন মালামাল। সরকারের উচিত এই মূর্হতে এটি বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।’

সীমান্তের স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘এখন মাদকের নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। মিয়ানমারের সংঘাত পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মির ভূমিকা পরিষ্কার না। এখন মাদকের চালান প্রবেশ অনেক বেশি চিন্তার। তবে বিজিবি সীমান্তে মাদক রোধে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ’

সীমান্তে মাদক আসা প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একযোগে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।

© Samakal
Shares:
Leave a Reply