السلام عليكم و رحمة الله

বক্তৃতা হল নির্দিষ্ট কিছু বিষয়কে কেন্দ্র করে কিছু কথার সমষ্টি। বক্তব্য আমরা শুনে থাকি স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি কিংবা অন্য কোন বক্তৃতার মঞ্চে। যেখানে আমাদের সহপাঠীরা বা শিক্ষকরা বক্তৃতা দিয়ে থাকেন। তাদের শ্রুতি মধুর বক্তৃতা আমরা শ্রবণ করে থাকি। তাদের বক্তৃতা শুনে আমাদেরও বক্তৃতা দেয়ার ইচ্ছা বা আগ্রহ জাগ্রত হয় ‌। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের চিন্তাভাবনা পরিস্থিতি ইত্যাদি কারণে তা হয়ে ওঠে না। এক্ষেত্রে ভয় সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে কাজ করে। এ সকল সমস্যা অতিক্রম করে কিভাবে একজন তরুণ উদীয়মান বক্তা সাবলীলভাবে মনোরঞ্জন বক্তৃতা দিতে পারে তা নিয়ে আজকের এই পোস্ট। আশা করি একজন নব্য বক্তৃতার জন্য তা অত্যন্ত সহায়ক হবে।

বক্তৃতা হচ্ছে কথার ফুলঝুরি। সুন্দর শব্দ চয়ন সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাব ভঙ্গিমায় একজন বক্তা পৌঁছে দিতে পারে তার বক্তৃতা শ্রোতার হৃদয় কর্ণে।

কিন্তু একজন নতুন বক্তা হিসেবে আমি কি পারবো শ্রোতার মনোরঞ্জন করতে?

বক্তৃতার কথা মালায় আমি কি সক্ষম হব স্রোতার হৃদয় কে বিগলিত করতে?

উত্তর হচ্ছে অবশ্যই পারব ‌। ধৈর্য, শ্রম, চেষ্টা মানুষকে পৌঁছে দেয় তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে। সুতরাং এটা ভেবে দ্বিধাদ্বন্ধে ভোগা উচিত নয় যে আমার পক্ষে বক্তৃতা দেওয়া অসম্ভব। এটা ভেবে থাকলে যে আমার পক্ষে বক্তৃতা দেওয়া সম্ভব নয় তাহলে ইউ আর ইন দা রং ট্রাক। কাম টু দা রাইট ট্র্যাক।

বক্তৃতা দেওয়ার জন্য সর্বপ্রথম আমাকে বক্তৃতার বিষয় নির্বাচন করতে হবে । অতঃপর সে বিষয়ে প্রচুর পরিমাণ অধ্যয়ন করতে হবে । তারপর তথ্যসম্বলিত একটি বক্তৃতা লিখিত আকারে প্রস্তুত করতে হবে। অতঃপর একজন নতুন বক্তা হিসেবে উক্ত লিখিত বক্তৃতাটি মুখস্ত করতে হবে । ভালোভাবেই মুখস্ত করতে হবে । একজন নতুন বক্তার জন্য এই নিয়মটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ‌।

একজন নতুন বক্তা অবশ্যই বক্তৃতা দেওয়ার পূর্বে তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। একজন নতুন বক্তার বক্তৃতা দেয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে প্রতিবন্ধক সেটি হচ্ছে ভয়। তাই প্রথমেই ভয়কে করতে হবে জয়।

বক্তৃতা মুখস্ত করার পর আপনার কোন একজন বন্ধুকে শোনাতে পারেন ‌। যদি বন্ধুকে শোনাতে লজ্জা বোধ করেন। তাহলে নিজেই আয়নার সম্মুখে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা আর প্র্যাকটিস করুন । চোখে চোখ রেখে প্র্যাকটিস করুন। শারীরিক অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে আপনার ভাব প্রকাশ করুন ‌।

বক্তৃতার জন্য কি প্রয়োজন?
বক্তৃতা দেওয়ার জন্য অবশ্যই জ্ঞানের গভীর সমুদ্রে হাবুডুবু খাবার প্রয়োজন নেই। এক মুষ্টি জ্ঞান, একটি জরতাবিহীন জিহবা ও একটি শব্দ নিয়ন্ত্রক ব্রেক। বক্তৃতা দেয়ার জন্য জাস্ট এতোটুকুই যথেষ্ট।‌

বক্তৃতার প্রস্তুতি সরূপ নিয়মিত শরীর চর্চা করতে পারেন। এতে মাথা ফ্রেশ থাকবে। অতঃপর আত্মবিশ্বাস ী হওয়ার চেষ্টা করুন। অন্যেরা পারলে আমি কেন পারব না।

এরপর যখন আপনার কাঙ্খিত বক্তৃতার দিন ঘনিয়ে আসবে। যখন বক্তৃতার মঞ্চে উঠবেন তখন শান্ত থাকার চেষ্টা করবেন। কোন অবস্থায় উত্তেজিত হওয়া যাবে না বিচলিত হওয়া যাবে না ওভার থিংকিং করা যাবে না । ধীর পায়ে হেঁটে বক্তৃতা মঞ্চের ডায়াসে যাবেন। ডায়াসে যাওয়ার পর শ্রোতা বা আশেপাশে যারা আছে কারো দিকে তাকাবেন না। কিছুটা উপরের দিকে তাকিয়ে বক্তৃতা দেয়ার চেষ্টা করুন। কেননা আপনার চোখ যদি শ্রোতার দিকে নিবদ্ধ হয় তাহলে আপনার বক্তৃতা কেল্লাফতে । এটা একজন নতুন বক্তার জন্য প্রযোজ্য। অবশ্যই ভালো মানের বক্তৃতার জন্য এটি অনুচিত। নতুন বক্তা হিসেবে অবশ্যই আপনাকে টিপসটি অনুসরণ করতে হবে।

বক্তৃতার সাথে সাথে আপনার হাত নাড়াচাড়া করুন। অঙ্গভঙ্গিতে ভাব প্রকাশের চেষ্টা করুন। মিডিয়াম স্পিডে বক্তৃতা দিবেন। তাড়াহুড়ো করবেন না। প্রতিটি শব্দ পরিপূর্ণ উচ্চারণ করুন। আপনি যে বক্তৃতা মুখস্ত করেছেন এটা যেন শ্রোতা বুঝতে না পারে।

বক্তৃতা দেয়ার পূর্বে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি পান করে নেয়া ভালো । আপনার মুখ হাস্যজ্জল রাখার চেষ্টা করুন। বক্তৃতার মাঝখানে যদি কোন জায়গায় আটকে যান তাহলে বারংবার একই শব্দ বা কি বাক্য বারবার উচ্চারণ করবেন না। বরং পাঁচ থেকে সাত সেকেন্ড চোখ বন্ধ রেখে মনে করার চেষ্টা করুন। নতুনদের জন্য আরেকটি করণীয় বিষয় হলো যে যদি আপনি দশ মিনিট বক্তৃতা দিতে চান তাহলে ২০ মিনিটের বক্তৃতা প্রস্তুত করতে হবে।

Shares:
Leave a Reply