নবজাতকের জন্য কেমন তেল?

নবজাতকের জন্য কেমন তেল?

লাইফস্টাইল

নুরুল্লাহ আলম নুর

2025-01-12

নবজাতকের ত্বক খুবই কোমল ও স্পর্শকাতর। তাদের ত্বক সুরক্ষার জন্য বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। তেল দিয়ে ম্যাসাজ শুধু শিশুর ত্বকের পরিচর্যাই করে না, এটি তার মানসিক প্রশান্তি ও শারীরিক বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে বাজারে বিভিন্ন ধরনের তেলের প্রাচুর্যের ভেতর সঠিক তেল নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 
নারকেল তেল
নারকেল তেল সারাবছর নবজাতকের ত্বকে ম্যাসাজের জন্য উপযুক্ত। সংবেদনশীল এবং কোমল ত্বকের জন্য এটি সেরা। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। নারকেল তেল খুবই জনপ্রিয়। কারণ এটি ত্বকে দ্রুত শোষিত হয় এবং প্রাকৃতিক ঠান্ডা অনুভূতি দেয়। এটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণাগুণযুক্ত, যা শিশুর ত্বকের ক্ষতস্থান নিরাময়ে সাহায্য করে। এটি ত্বকের র‍্যাশ ও ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়ক। নারকেল তেল ত্বকের যত্নের বাইরেও ম্যাসাজ-সময়ে একটি প্রশান্তিময় পরিবেশ তৈরি করে। 
বাদাম তেল
বাদাম তেল প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন এ, বি১, বি২, বি৬ এবং ই-এর পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এটি শিশুর কোমল ত্বক এবং মসৃণ চুলের যত্নে অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত ব্যবহার করলে শিশুর ত্বকে একটি উজ্জ্বল আভা দেখা যায়। ত্বক এবং চুলের যত্ন ছাড়াও, বাদাম তেল শিশুর নখের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এটি নখকে মজবুত, স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল রাখে। ভিটামিন ই-সমৃদ্ধ বাদাম তেল শিশুর ত্বককে গভীর থেকে পুষ্টি দেয়। এটি শুষ্ক ত্বক ময়েশ্চারাইজ করতে এবং মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। তবে শিশুর বাদাম জাতীয় খাবারে অ্যালার্জি থাকলে এটি এড়িয়ে চলা উচিত।
তিলের তেল
তিলের তেল গরম প্রকৃতির, যা শীতকালে ব্যবহারের জন্য উত্তম। এটি পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তিলের তেল, আয়ুর্বেদে শিশুদের ম্যাসাজের জন্যও জনপ্রিয়। তিলের তেল শিশুর কোমল ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি (ইউভি রে) থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে, যা শিশুর ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।
জোজোবা তেল 
জোজোবা তেল নবজাতকের ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতাকে সমর্থন করে এবং হালকা হওয়ায় দ্রুত শোষিত হয়। এটি ত্বকের র‍্যাশ বা লালচে ভাব কমাতেও সাহায্য করে।
জলপাই তেল (অলিভ অয়েল)
অলিভ অয়েল শিশুর ত্বকে ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। নবজাতকের যদি একজিমার মতো ত্বকের সমস্যা থাকে, তবে অলিভ অয়েল এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এটি ত্বকের লেয়ার ভেঙে দিতে পারে।
যেসব তেল এড়িয়ে চলা উচিত
মিনারেল তেল
মিনারেল তেল লোমকূপ বন্ধ করে দেয় এবং ত্বকের শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি করে। 
সুগন্ধিযুক্ত তেল
পারফিউমযুক্ত তেল শিশুর ত্বকে অ্যালার্জি বা জ্বালাপোড়ার কারণ হতে পারে।
কৃত্রিম রাসায়নিক মিশ্রিত তেল
কৃত্রিম উপাদানযুক্ত তেল শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর এবং এটি র‍্যাশ বা প্রদাহ বাড়াতে পারে। 
ম্যাসাজের সঠিক পদ্ধতি
তেলের তাপমাত্রা 
হালকা গরম তেল ব্যবহার করুন, যা ত্বকে আরাম দেয়।
প্যাচ টেস্ট 
শিশুর ত্বকের একটি ছোট অংশে তেল পরীক্ষা করুন। কোনো অ্যালার্জি বা প্রতিক্রিয়া দেখা না গেলে তা ব্যবহার করুন। 
ম্যাসাজের সময় ও কৌশল
শিশুকে আরামদায়ক স্থানে শুইয়ে হালকা হাতে তেল ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজের সময় গানের সুর বা নরম স্পর্শ শিশুকে মানসিক প্রশান্তি দেয়। 
সময় নির্বাচন
গোসলের আগে তেল ম্যাসাজ শিশুর রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় এবং পেশি শিথিল করে, যা গোসলকে আরও আরামদায়ক করে তোলে। অন্যদিকে রাতে ম্যাসাজ স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে এবং শিশুকে গভীর ও দীর্ঘ সময় ঘুমাতে সহায়তা করে। 
সূত্র: হেলথলাইন 

© Samakal
Shares:
Leave a Reply