
বাঁচানো গেল না বাবুল কাজীকে
রাজধানী
সমকাল প্রতিবেদক 2025-01-20
রাজধানীর বনানীর বাসায় গ্যাস লাইটার বিস্ফোরণে দগ্ধ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতি বাবুল কাজী (৫৯) মারা গেছেন। রোববার বিকেলে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। শনিবার রাত ৮টা থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
পরিবারের সদস্যরা জানান, পোশাক ব্যবসায়ী বাবুল কাজী বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের ১০৯ নম্বর বাড়ির চারতলায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। শনিবার ভোরে বাসার বাথরুমে ঢুকে ধূমপান করার জন্য লাইটার জ্বালিয়েছিলেন তিনি। সে সময় বিকট শব্দের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বাবুল পড়ে যান এবং দগ্ধ হন। এ অবস্থায় কোনো রকমে বাথরুমের দরজা খোলেন তিনি। বিকট শব্দ পেয়ে পরিবারের সদস্যরা বাথরুমের সামনে গিয়ে দেখেন, তাঁর প্রায় পুরো শরীর দগ্ধ হয়েছে।
বাবুল কাজীর বড় বোন নজরুলসংগীত শিল্পী খিলখিল কাজী জানান, তিনিও বনানীতে বসবাস করেন। ভাই দগ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে তিনি ছুটে যান বাসায়। এর পর দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাঁকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, ‘শীতের কারণে সবাই দরজা-জানালা বন্ধ করেই রাখে। বাথরুমের ভেতরেও আবদ্ধ ছিল। ফলে সেখানে গ্যাস লাইটার জ্বালানোর পরই বিস্ফোরণ হয়।’
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, বাবুলের শ্বাসনালিসহ শরীরের ৭৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। মাথা, মুখমণ্ডল, বুক, পেট, পিঠ ও হাত পুড়ে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। রাতে অবস্থার আরও অবনতি হলে ৮টায় লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তাঁর চিকিৎসার জন্য ১৬ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। রোববার বিকেলে তাঁর ইজিসি ফ্ল্যাট আসছিল, পালস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিকেল সাড়ে ৫টায় তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ রাতে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আজ সোমবার বাদ জোহর বনানী সোসাইটি মসজিদে জানাজার পর বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরে দাফন করা হতে পারে তাঁকে।
আবৃত্তিকার কাজী সব্যসাচী ও উমা কাজীর দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বাবুল কাজী ছোট। তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।