বুলগেরিয়া দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ, যা অনেকেরই কর্মসংস্থানের গন্তব্য হিসেবে আকর্ষণীয়। ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো বুলগেরিয়ায় যাওয়াও সহজ নয়, বিশেষত কাজের ভিসার ক্ষেত্রে। বুলগেরিয়া কাজের জন্য ভিসা পেতে হলে অবশ্যই দেশটির সরকারি সার্কুলার অনুসরণ করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে এজেন্সির মাধ্যমে বুলগেরিয়া কাজের ভিসার আবেদন করা সম্ভব। তবে এর জন্য আপনাকে বুলগেরিয়ার সরকারি সার্কুলারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। প্রতিবছর দেশটি বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিক নিয়োগ করে, যার মধ্যে কাজের ভিসা এবং বিশেষত গার্মেন্টস খাতে ভিসার চাহিদা বেশি।
সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে বুলগেরিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়া তুলনামূলক সহজ হবে। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে বুলগেরিয়া কাজের ভিসা প্রসেসিং, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ ও বেতন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বুলগেরিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়
বুলগেরিয়া দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের একটি দেশ, যেখানে জীবনযাত্রার মান বাংলাদেশের তুলনায় অনেক উন্নত। উন্নতমানের জীবনযাপন এবং উচ্চ আয়ের আশায় অনেক বাংলাদেশি নাগরিক বুলগেরিয়া কাজের ভিসা পেতে আগ্রহী। বুলগেরিয়ার কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে ভারতের বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
এছাড়া বাংলাদেশে থেকেই বিভিন্ন এজেন্সি বা দালালের সাহায্যে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করা সম্ভব।সরকারি এবং বেসরকারি পদ্ধতিতে ভিসা তৈরির খরচে পার্থক্য থাকে। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ভিসা প্রক্রিয়াটি শুরু করার জন্য একটি বিশ্বস্ত এজেন্সির সাহায্য নিতে হবে।
কারণ বাংলাদেশে অনেক অস্বচ্ছ এজেন্সি রয়েছে, যারা প্রতারণা করে। তাই অভিজ্ঞ ও নির্ভরযোগ্য এজেন্সি বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কিছু মানুষ নিজে থেকেই বুলগেরিয়ার কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে চান। এজন্য প্রথমে আপনাকে বুলগেরিয়ার কোনো কোম্পানি থেকে চাকরির অফার পেতে হবে।
অনলাইনে অনেক সাইট আছে যেখানে আপনি বুলগেরিয়ার চাকরি খুঁজে পেতে পারেন। আপনাকে আপনার যোগ্যতা এবং দক্ষতা অনুযায়ী উপযুক্ত কাজের জন্য আবেদন করতে হবে। চাকরি নিশ্চিত হলে আপনাকে কাজের অনুমোদন এবং ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করা হবে। এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
বুলগেরিয়া কাজের ভিসা পেতে কি কি লাগে?
বুলগেরিয়া কাজের ভিসা আবেদন করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয়। সঠিক কাগজপত্র না দিলে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া কঠিন হতে পারে। বুলগেরিয়া কাজের ভিসা পেতে যেসব কাগজপত্রের প্রয়োজন তা হলো:
- বৈধ পাসপোর্ট: ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক।
- কাজের চুক্তিপত্র: বুলগেরিয়ার কোনো কোম্পানির সাথে চাকরির চুক্তি পত্র জমা দিতে হবে।
- কাজের অফার লেটার: চাকরির অফার লেটার যা কোম্পানি থেকে পেয়েছেন।
- আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ: আপনার আর্থিক পরিস্থিতি যাচাই করার জন্য প্রমাণপত্র।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স: অপরাধমূলক কার্যকলাপ থেকে মুক্ত থাকার প্রমাণ হিসেবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ।
- পাসপোর্ট সাইজের দুটি ছবি: প্রয়োজনীয় ছবি যা ভিসা আবেদন ফর্মে জমা দিতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ: শিক্ষাগত সনদপত্রের কপি।
- স্বাস্থ্য সনদ: স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট যা ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ।
- ভ্রমণ বীমা
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ: পূর্ববর্তী চাকরির অভিজ্ঞতার প্রমাণ।
- ভিসা ফি: ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রযোজ্য ফি।
এসব ডকুমেন্ট সঠিকভাবে প্রস্তুত এবং জমা দিলে বুলগেরিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
বুলগেরিয়া যেতে কত টাকা লাগে?
ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী বুলগেরিয়া ভিসার খরচ পরিবর্তিত হতে পারে। যদি আপনার কাজের ভিসা বা গার্মেন্টস ভিসা হয়, তবে এই ভিসাগুলোর জন্য কিছুটা বেশি খরচ হতে পারে। তবে, যদি আপনি সরকারিভাবে ভিসা পান, তাহলে খরচ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে যদি কোনো এজেন্সির মাধ্যমে স্টুডেন্ট ভিসা বা ভিজিট ভিসা সংগ্রহ করতে চান, তবে খরচ সাধারণত ৫ লাখ টাকা থেকে ৮ লাখ টাকার মধ্যে হতে পারে। এই খরচ ভিসার প্রকার এবং এজেন্সির উপর নির্ভর করে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।
Read Also: মালয়েশিয়া ভিসা কবে খুলবে
বুলগেরিয়া বেতন কত?
বুলগেরিয়া যাওয়ার আগে অনেকেই বেতনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে চায়। বুলগেরিয়ায় কাজের বেতন মূলত আপনার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে। যদি আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা ভালো থাকে, তাহলে আপনি ৭০,০০০ টাকা থেকে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন উপার্জন করতে পারেন। তবে, যদি আপনি নতুনভাবে কাজ শুরু করেন, তাহলে আপনার বেতন ৪০,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
বুলগেরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি?
বর্তমানে বুলগেরিয়ায় গার্মেন্টস এবং শিল্পকারখানার কাজে চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন কাজের জন্য।
এছাড়া, আইটি সেক্টর, ইলেকট্রিশিয়ান, ড্রাইভার, ফুড ডেলিভারি এবং নির্মাণ শ্রমিকের কাজের চাহিদাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এসব সেক্টরে কাজের সুযোগগুলো বর্তমানে খুবই সুবিধাজনক।
Read Also: দুবাই ভিসা কবে খুলবে