
সংসদে নারী আসন ১০০ এবং সরাসরি নির্বাচনের দাবি সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের
বাংলাদেশ
সমকাল প্রতিবেদক 2025-01-12
সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ১০০ এবং সরাসরি নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম। সরকার গঠিত নারী সংস্কার কমিশনের কাছে এমন ১৭টি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ তুলে ধরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে তারা।
রোববার সংগঠনটির পক্ষ থেকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলন সংস্কার কমিশনের কাছে এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দিলরুবা নুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মনীষা চক্রবর্তী, উপদেষ্টা নুরজাহান ঝর্ণা, দপ্তর সম্পাদক রোখসানা আক্তার আশা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ সত্ত্বেও নারীদের প্রতি সমাজের বৈষম্যমূলক আচরণ, নির্যাতন-নিপীড়ন কমেনি।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে ১৭ দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে– সম্পত্তির উত্তরাধিকারে সমান অধিকার, জাতিসংঘের সিডও সনদে সংশ্লিষ্ট ধারায় বাংলাদেশের আপত্তি তুলে নেওয়া, বৈষম্যমূলক পারিবারিক আইন বিলুপ্ত করে ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু এবং সব স্তরে সমকাজে নারী-পুরুষের সমমজুরি নিশ্চিত করতে হবে। প্রবাসী নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসগুলোর কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।
সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে–ঢাকাসহ সব নগর ও পৌর এলাকায় সরকারিভাবে ডে-কেয়ার সেন্টার চালু, প্রতি উপজেলার সরকারিভাবে নারী হোস্টেল নির্মাণ এবং জেলার জেলায় দুঃস্থ নারী পুনর্বাসন কেন্দ্রে নির্মাণ করতে হবে।
গণপরিবহনে চলাচলকারী ৯৪ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার এমন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গণপরিবহনে ৪০ ভাগ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে। অফিস টাইমে নারীদের জন্য আলাদা সিটি সার্ভিস চালু করতে হবে। গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিরূপণ এবং স্বীকৃতি দিতে হবে। গৃহ শ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নারী ও কন্যা শিশু ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতনের বিচার প্রক্রিয়া ১৮০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
নওবাব ফয়জুন্নেসা, বেগম রোকেয়া, ইলা মিত্র, বীরকন্যা প্রীতিলতা, সুফিয়া কামাল, জাহানারা ইমাম, তারামন বিবি, কানন বিবিসহ মহীয়সী নারীদের জীবন সংগ্রাম পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জাতীয় পর্যায়ের নারী খেলোয়াড়দের প্রতি বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে। বিশেষ বিবেচনায়, আদালতের নির্দেশে বাল্য বিবাহকে বৈধাতা দেওয়া বাতিল করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত সব বীরাঙ্গনা নারীদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং দ্রুত তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।