‘সন্তানকে নিজের’ দাবি, না পেয়ে সাবেক স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা

‘সন্তানকে নিজের’ দাবি, না পেয়ে সাবেক স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা

সারাদেশ

মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

2025-01-13

চাঁদপুরের মতলবে সাবেক স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে থাকা সন্তানকে নিজের দাবি করে না পেয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। আজ সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে মতলব দক্ষিণ উপজেলার সারপাড় গ্রামে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা গলাকাটা লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিলে তারা এসে উদ্ধার করে।

সরেজমিন জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার লাকী বেগমের সাবেক স্বামী কুমিল্লার তিতাসের জগৎপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়া (৩৫)। সোমবার তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। তাঁর পেটেও ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর সাবেক স্ত্রীর নিথর দেহের ওপর পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি এবং মোস্তফাকে আটক করেছে। নিহত লাকী সারপাড় গ্রামের আন্দী প্রধানীয়া বাড়ির মৃত নজরুল প্রধানীয়ার মেয়ে। তাঁর ছয় বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। মোস্তফার ভাষ্য, তিনি চট্টগ্রামে ট্রাকচালক হিসেবে চাকরি করেন। সোমবার সকালে আসেন তাঁর সন্তানকে নেওয়ার জন্য।

লাকীর মামা সারপাড় গ্রামের টুকু প্রধান ও খিলমেহের গ্রামের খালাতো ভাই মো. রাসেল জানান, লাকী গার্মেন্টসে কাজের জন্য প্রায় আট বছর আগে চট্টগ্রামে যান। সেখানে মোস্তফার সঙ্গে পরিচয় হলে পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেন। কয়েক বছর পর তাদের বিয়েবিচ্ছেদ হয়। এর পর লাকীর গৌরীপুরে বিয়ে হয়।

কয়েক মাস আগে সেই বিয়েও ভেঙে যায় লাকীর। এক মাস আগে থেকে সারপাড় গ্রামের মামুন প্রধানের বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন বলে তারা জানান। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লাকী বেগমের ছেলে জুনায়েদ (৬) জানায়, তার মায়ের মুখে ও গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছে মোস্তফা।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী লাকীর ফুপাতো বোন প্রতিবেশী জেসমিন আক্তার বলেন, সকাল ৮টার দিকে লাকী চিৎকার দিয়ে ঘর থেকে বের হন। তিনি আওয়াজ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন, তাঁর গলা ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তখন আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। এ অবস্থায় মোস্তফা ঘর থেকে ছুরি হাতে বেরিয়ে লাকীর ওপর পড়ে যান।

জেসমিনের ভাষ্য, মোস্তফার সন্তান নয় জুনায়েদ। তাঁর সঙ্গে কথা বলে এমনই মনে হয়েছে। লাকীর তিনটি বিয়ে হয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সোমবার ভোরে ফজরের নামাজের সময় মোস্তফাকে সারপাড় গ্রামে দেখা যায়। এর আগে তাঁকে কখনও কেউ দেখেননি। তিনি সুস্থ হলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য জেনে তাঁর শাস্তি দাবি করেছেন পরিবারের সদস্য ও এলাকার লোকজন।

এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেহ আহমেদ বলেন, মোস্তফাকে আহত অবস্থায় আটক করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

ওসি আরও বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

© Samakal
Shares:
Leave a Reply