রক্তশূন্যতা কেন হয়?

রক্তশূন্যতা কেন হয়?

ডাক্তারবাড়ি

 লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ

2025-01-13

বয়স ও লিঙ্গভেদে হিমোগ্লোবিন যখন কাঙ্ক্ষিত মাত্রার নিচে অবস্থান করে, তখন আমরা একে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা বলি। হিমোগ্লোবিন শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেয় সঞ্জীবনী অক্সিজেন।
রক্তশূন্যতা হলে কী হয়?
হিমোগ্লোবিন কমতে থাকলে ক্লান্তি দানা বাঁধে। শরীরে ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। স্বল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠে শরীর। হৃৎপিণ্ডের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যায়। এমনকি তীব্র রক্তশূন্যতা হার্ট ফেইলিওর পর্যন্ত করতে পারে। তখন গায়ে-পায়ে পানি জমে যায়। শুয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট লাগে। রক্তশূন্যতার কারণে ঠোঁটের কোণে ক্ষত হয়, জিহ্বায় ঘা হয়। জিহ্বার গোড়ায় থাকা পাপিলা ক্ষয় হয়ে হতে পারে মাংসের মতো লালচে। চুলের ঝলমলে ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে যায়, চুল ফেটে যায়, নখ ফেটে যায়। এর ফলে দেখা দিতে পারে স্নায়বিক দুর্বলতা। দীর্ঘস্থায়ী রক্তশূন্যতায় খাদ্যনালি ওপরের দিক চেপে যায়। ফলে ঢোক গিলতে কষ্ট হয়, নারীর মাসিক হয়ে পড়ে অনিয়মিত। লোহিত কণিকা ভেঙে রক্তশূন্যতা হলে জন্ডিস দেখা দেয়। সুতরাং রক্তশূন্যতার লক্ষণ কারণভেদে বিভিন্ন হতে পারে।
করণীয়: রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত হলে প্রথমে পরখ করে নিতে হবে এর তীব্রতা কতটুকু। এর পেছনের কারণ খুঁজে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যেহেতু আয়রনের ঘাটতির কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, সে জন্য খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে লৌহসমৃদ্ধ খাবার। এ ছাড়া ভিটামিন বি-১২ এবং ফলিক এসিডের ঘাটতি হলেও হতে পারে রক্তশূন্যতা। লাল মাংস, গিলা, কলিজা, ছোট মাছ, লালশাক, কচুশাক, সবুজ শাকসবজি আর ফলমূলের জোগান বাড়াতে হবে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায়। ক্ষেত্রবিশেষে ফলিক এসিড ভিটামিন খেতে হবে। কোনো কোনো রক্তশূন্যতায় আয়রন গ্রহণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, সেটিও জানতে হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে।v
[মেডিসিন স্পেশালিস্ট ]

© Samakal
Shares:
Leave a Reply