
জমির দাম বাড়ায় রেজিস্ট্রি বন্ধ
সারাদেশ
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি 2025-01-16
নাটোরের লালপুরে মৌজার দাম বেড়ে যাওয়ায় জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জমি বেচাকেনায় ইচ্ছুক সাধারণ মানুষ। এদিকে ৪৪ দিন ধরে সার্ভার জটিলতায় নামজারি, কর আদায়সহ বন্ধ রয়েছে ভূমিসংক্রান্ত বহুবিধ কাজ। এতে কমেছে সরকারের রাজস্ব আয়।
ভুক্তভোগী নাজমুল হক জানান, তিনি আগের দামে জমি কিনেছেন। নতুন দাম নির্ধারণ করায় তাঁর রেজিস্ট্রি খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এ কারণে জমি কিনেও রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না।
সৈয়দ আলী জানান, অসুস্থতার কারণে জমি বিক্রি করতে হচ্ছে। খাজনা ও জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ থাকায় ক্রেতার কাছ থেকে টাকা নিতে পারছেন না। এ অবস্থা কতদিন চলবে কে জানে?
ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে নিবন্ধনের স্ট্যাম্প দেড় শতাংশ, নিবন্ধন মাশুল ১ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ৩ শতাংশ ও এলাকাভেদে ১ থেকে ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) দিতে হয়। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানের জমি-ফ্ল্যাট কেনাবেচা হলে যোগ হয় আরও ৪ শতাংশ উৎসে কর। মধুবাড়ি মৌজার এক শতক জমির সরকার নির্ধারিত বাজার দাম আগে ছিল ৩৪ হাজার ৭১৫ টাকা। নতুন করে দাম নির্ধারণ হয়েছে ৬ লাখ ৩০ টাকা; যা আগের বাজার দামের প্রায় ১৯ গুণ বেশি। গত ১ জানুয়ারি থেকে মধুবাড়ি মৌজাসহ আরও ৭টি মৌজায় নতুন বাজার দাম কার্যকর হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে মৌজাদর অনুযায়ী জমি কেনাবেচা বা নিবন্ধন করা হয়। চাইলেই কেউ কম বা বেশি দাম দেখিয়ে জমি কেনাবেচা করতে পারবেন না। মৌজাদর নির্ধারণের কাজটি হয় ‘সর্বনিম্ন বাজারমূল্য বিধিমালা’ অনুযায়ী। এর জন্য একটি কমিটি করা হয়। কমিটির মাধ্যমে দুই বছর পরপর বাজারদর হালনাগাদ করা হয়। পরে দাম চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করেন ভূমি নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক।
উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. নাঈম উদ্দিন বলেন, ২০১০ সালের ভূমি বাজারদর বিধিমালা অনুযায়ী, দুই বছর পর পর জমির দাম নির্ধারণ করা হয়। এ দুই বছরের গড় দাম হিসাবে নতুন দাম নির্ধারণ হয়েছে। বিধিমালার বাইরে কিছু করার নিয়ম নেই। ক্রেতাকে নতুন দাম অনুযায়ী ফি দিতে হবে।
জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জমি রেজিস্ট্রেশন হয় না বললেই চলে। সার্ভার জটিলতায় নামজারি, রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। এর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে জমির দাম নির্ধারণ। কেউ আবেদন করলে পুনর্বিবেচনা করা যায়। তিনি আরও বলেন, দলিল রেজিস্ট্রি কমলে রাজস্ব তো কমবেই।’