সেই ইউপি কার্যালয়ের তালা ভাঙলেন কয়েক শত নারী
সারাদেশ
কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 2025-01-13
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ৮ নম্বর যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের তালা প্রায় ৯ দিন পরে ভেঙেছেন কয়েক শত নারী। আজ সোমবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে হাতুড়ি দিয়ে তারা তালা ভাঙেন। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে চেয়ারম্যানের বাড়িতে যান এবং তাকে পরিষদের কার্যালয়ে এনে সেবা নেন।
দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পরিষদ চত্বরের বাইরে ও ভেতরে শত শত নারী। চেয়ারম্যান কক্ষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন গ্রাম পুলিশ। আর পরিষদের বারান্দায় বসে জন্ম-নিবন্ধনের সনদে সই করছেন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন নারীরা।
এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারীরা বলেন, মিথ্যা অভিযোগে একটি পক্ষ ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা দিয়েছিল। সেজন্য চেয়ারম্যান পথে-ঘাটে, বাগানে বসে কাগজে সই করছিলেন। অনেকে পরিষদে এসে ফিরে যাচ্ছিলেন। এতে চরম দুর্ভোগ হচ্ছিল। সেজন্য হাতুড়ি দিয়ে কার্যালয়ের তালা ভেঙে তারা চেয়ারম্যানকে বাড়ি থেকে পরিষদে ডেকে এনেছেন।
যদুবয়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে কে বা কারা ছুটির রাতে পরিষদ চত্বরে ছাত্রলীগের কেক কেটেছিল। সেজন্য বিএনপির লোকজন কার্যালয়ে তালা লাগিয়েছিলেন। এতে জনগণের ভোগান্তি হচ্ছিল। তাই সোমবার শত শত সেবা প্রত্যাশী নারীরা তালা ভেঙে তাকে পরিষদে নিয়ে এসেছেন।’
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ৪ জানুয়ারি রাতে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ছাত্রলীগের ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কেটে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার নেতৃত্বে এই কেক কাটা হয়। পরে কেক কাটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে ওই দিন রাতেই ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা দেন। ৫ জানুয়ারি দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করে পরিষদ থেকে সচিব, গ্রাম-পুলিশ ও সেবা প্রত্যাশীদের বের করে দিয়ে পরিষদ ভবনের প্রধান ফটকের গেটে তালা দেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে খবর পেয়ে ৭ জানুয়ারি দুপুরে পরিষদ চত্বরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন থানার ওসি। বৈঠক শেষে তালা খুলে দেন নেতা-কর্মীরা। আর আজ সোমবার স্থানীয় নারীরা চেয়ারম্যানের কক্ষের তালা ভাঙেন।